গুরুসদয় দত্ত : ব্রতচারী প্রতিষ্ঠাতার জীবনী / Gurusaday Dutta : Biography of Bratachari Founder

 

This Bengali article deals with the Biography of Gurusaday Dutt or Dutta ( গুরুসদয় দত্ত ), the founder of Bratachari Movement. It's really an unbelievable life story ( জীবনকাহিনী ).


১৯২৮ সালের ২৮শে মার্চ। বামুনগাছি লোকো কারখানার গেটে অনেক শ্রমিক সেদিন জড়ো হয়ে ধর্মঘটে সামিল হয়েছিলেন তাদের দাবি ছিল একটাই, মাইনে বাড়াতে হবেকিন্তু সেই আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপরে আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী। পুলিশের গুলিতে ৪ জন শ্রমিকের মৃত্যু হল, আহত ৫০ জনেরও বেশি। তখন জেলাশাসক ছিলেন একজন ভারতীয় আইসিএস অফিসার তিনিই সেই নৃশংস ঘটনার তদন্তভার নিয়েছিলেন। তদন্ত শেষে তিনি Mr. Sturgis এবং Mr. Cristi – এই দুই ইংরেজ অফিসারকে দোষী সাব্যস্ত করেন

ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশদের দোষী সাব্যস্ত করছেন একজন ভারতীয় আইসিএস অফিসার--- এটা ব্রিটিশদের পক্ষে হজম করাটা খুব শক্ত ছিল ফলাফল হিসাবে দেখা গেল যে, অচিরেই সেই ভারতীয় অফিসারের হাওড়া থেকে ময়মনসিংহে বদলি

 সেদিনের কর্তব্যপরায়ন সেই ভারতীয় আইসিএস অফিসারটির নাম গুরুসদয় দত্ত



গুরুসদয় দত্ত : ব্রতচারী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা 

ময়মনসিংহ থেকে তাকে আবার বদলি করা হলো। এবার বদলি করা হল  বীরভূমে১৯৩১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে সেখানে একটি শিক্ষাশিবির তৈরি করলেনআর সেই শিক্ষাশিবির থেকেই জন্ম নিল তাঁর  বিখ্যাত ব্রতচারী আন্দোলন, যে আন্দোলনের জন্য তিনি হয়ে উঠলেন সারা ভারতবর্ষ জুড়ে এক সুপরিচিত ব্যক্তিত্বস্ত্রী-পুরুষ জাতি ধর্ম বয়েস নির্বিশেষে ব্রতচারী নামে এমন এক সংগঠন তিনি গড়ে তুললেন, যার মূল উদ্দেশ্যই ছিল একটা বলবান, শক্তিশালী সমাজ গঠন এবং তার সাথে সাথে জাতির আত্মার সার্বিক বিকাশ। সেখানে যেমন ছিল লোকসংগীত, লোকনৃত্য, লোকসংস্কৃতি --- তাদের সংরক্ষণ ও আন্তরিক চর্চার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটানোর সুদূরপ্রসারী ব্যবস্থা, তেমনি পাশাপাশি ছিল বিশ্বনাগরিকত্বের দৃঢ় অঙ্গীকার

ব্রতচারী সংঘের এই প্রতীক চিহ্নটিকে যদি আমরা লক্ষ্য করি, তাহলে সহজেই গুরুসদয় দত্তের তৈরি ব্রতচারী সংঘের কাজ এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা আমাদের তৈরি হবে।

তবে তার আগে আসুন, আমরা জেনে নেই, 'ব্রতচারী' বলতে গুরুসদয় দত্ত কি বুঝিয়েছেনসাধারণভাবে জীবনের কোন একটি লক্ষ্য বা অভিষ্ঠ সিদ্ধির জন্য সংকল্প গ্রহণ করে একাগ্রচিত্তে সেই সংকল্পকে কার্যে পরিণত করার চেষ্টার নামই হলো 'ব্রত'। কিন্তু গুরুসদয় দত্তের প্রয়োগ করা ব্রতচারীশব্দের মধ্যে 'ব্রত' শব্দটির অর্থ কিন্তু এমন সংকীর্ণ নয়। তাঁর কাছে 'ব্রত' শব্দটির অর্থ জীবনের কোন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা অভিষ্ট সিদ্ধির চেষ্টা নয়, তাঁর কাছে 'ব্রত' মানে হল, জীবনকে সবদিক থেকে সকল প্রকারে  সফল সার্থক পূর্ণতাময় করে তুলবার এক প্রচেষ্টাসেই প্রচেষ্টাই হল 'ব্রত'। আর 'ব্রতচারী' কে? যিনি এই প্রচেষ্টা আন্তরিকভাবে করেন, তিনিই হলেন 'ব্রতচারী'

তা, মানুষের জীবনকে সম্পূর্ণ সার্থক, সফল, পূর্ণতাময় করে গড়ে তুলবার জন্যে গুরুসদয় দত্ত ৫টি পূর্ণব্রতের কথা বলেছেন। একজন যথার্থ ব্রতচারীকে এই পঞ্চব্রত অনুসরণ করতেই হবে এই পাঁচটি ব্রত হল, আপনারা হয়তো জানেন, জ্ঞান, শ্রম, সত্য, ঐক্য ও আনন্দবলাবাহুল্য, ব্রতচারীর সংঘের প্রতীক চিহ্নে এই পাঁচটি ব্রতের কথা কিন্তু সুন্দর ভাবে গুরুসদয় দত্ত উল্লেখ করেছেন।

এবার দেখুন, মাঝখানে যে প্রদীপটি আছে এটি হলো জ্ঞানের প্রদীপ দুপাশে রয়েছে কোদাল ও কুঠারএরা শ্রমের প্রতীক একটু নিচে, মাঝখানে রয়েছে একটি সরলরেখা। এটি সত্যের প্রতীকআর এই সরলরেখাটির মাঝখানে, যেখানে কোদাল ও কুঠার যুক্ত হয়েছে, সেই সংযোগস্থলটিকে বলা হচ্ছে গ্রন্থি। এই গ্রন্থি আসলে ঐক্যের চিহ্ন, ঐক্যের গ্রন্থিএতক্ষণ যা যা বললাম, সেই বিষয়গুলিকে সামগ্রিকভাবে ধারণ করে আছে অনেকগুলো লহরী বা ঢেউ এই লহরী হলো আনন্দের লহরী অর্থাৎ এরা আনন্দের প্রতীক চিহ্ন

এবার দেখুন, কোদাল ও কুঠারে দুটি ব আঁকা আছে। এই দুই ব-এর অর্থ হল বাংলার ব্রতচারী নিচে লেখা আছে জ.সো.বা. অর্থাৎ জয় সোনার বাংলা

গুরুসদয় দত্তের দূরদর্শী পরিকল্পনায় এবং তাঁর আন্তরিক পরিশ্রমে অচিরেই অখন্ড বাংলার বহু জায়গায় বাংলা ব্রতচারী সমিতির শাখা তৈরি হলো। ১৯৩২ সালে দক্ষিণ ভারতে সাউথ ইন্ডিয়া ব্রতচারী সোসাইটি তৈরি হলো। কলকাতায় ১২ নম্বর লাউডন স্ট্রীটে গড়ে উঠল মূল কার্যালয় ১৯৪১ সালে কলকাতা থেকে অদূরে ঠাকুরপুকুরের কাছে জোকায় তৈরি হল ব্রতচারী গ্রাম, ব্রতচারী জনশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।  

তা গুরুসদয় দত্তের এই ব্রতচারী আন্দোলন ইংরেজ সরকারের কাছে কিন্তু যথেষ্ট সন্দেহজনক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু যেহেতু সেখানে কোন রাজনীতির  লেশমাত্র বিষয় ছিলনা, তাই ইংরেজরা উল্টে সবাইকে অবাক করে দিয়ে গুরুসদয় দত্তের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করলেনকিন্তু দেশি লোকজনেরা, অনেকেই এই বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখলেন। কেউ কেউ মনে করলেন, এই ব্রতচারী আন্দোলন আসলে সরকারি আমলার খামখেয়ালীপনা ছাড়া আর কিছুই নয়। কেউ কেউ বললেন, এটা আসলে গুরুসদয় দত্তের ব্যক্তিগত জেদ আর অসহিষ্ণুতার প্রকাশমাত্র।

কিন্তু সেই বিরুদ্ধ পরিবেশের মধ্যেও গুরুসদয় দত্তের স্বদেশপ্রেম ছিল প্রশ্নাতীত। ব্রতচারী আন্দোলনে দীক্ষিতদের মধ্যে স্বদেশপ্রীতি জাগ্রত করা, বাঙালি সংস্কৃতির সার্বিক পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে তাদেরকে খাঁটি বাঙালি হিসেবে গড়ে তোলা, এমনকি হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সম্প্রীতি সুদৃঢ় করা  --- এই সমস্ত বিষয়ে তাঁর আগ্রহ, তার উদ্যোগ ছিল সর্বব্যাপী এবং সুদুরপ্রসারী 'বাংলার লোকশিল্প ও লোকনৃত্য' বইটির ভূমিকায় অরুন নাগ মহাশয় লিখেছেন যে, বাংলার প্রখ্যাত শিল্পী কামরুল হাসান, মেজর তোজাম্মেল হোসেন, এমনকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রমূখ অনেকেই সেসময় ব্রতচারী হয়েছিলেন


# গুরুসদয় দত্ত ঃ লোকগীতি সংগ্রাহক

গুরুসদয় দত্তের আরেকটি দিক ছিল, যা তিনি বাংলার ব্রতচারী আন্দোলনের মধ্যে নিপুন ভাবে সংযুক্ত করেছিলেন লোকনৃত্য এবং লোকগীতি -- এই দুইয়ের মিশ্রণে বাংলার যে লোকসংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, গুরুসদয় দত্ত ছিলেন তার অন্যতম অনন্যসাধারন এক সংগ্রাহক এবং পৃষ্ঠপোষক। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, জাতীয় জীবনের পুনর্গঠন করতে হলে জাতির প্রত্যেক নর-নারী বালকবালিকাকে জাতির নিজস্ব সংস্কৃতির আবহমান ধারার সঙ্গে অবশ্যই পরিচিতি এবং সংযোগ স্থাপন করতেই হবে। 

সেই লক্ষ্যে তিনি একদিকে যেমন লোকগীতি ও লোকনৃত্যের চর্চাকে ব্রতচারীসংঘের অবশ্যপালনীয় কার্যক্রম হিসাবে নির্ধারিত করেছেন, তেমনি অন্যদিকে সারাবাংলা ঘুরে ঘুরে তিনি বিভিন্ন লোকনৃত্য পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং পাশাপাশি সেইসব লোকনৃত্যের অনুষঙ্গ হিসেবে  রচিত হাজার হাজার লোকসংগীত তিনি সংগ্রহ করেছেন। সংগ্রহ করেছেনঃ

  •  ময়মনসিংহের জারি গান
  • ফরিদপুরের সারি গান
  • নদীয়ার বাউল গান
  • বীরভূমের রায়বেঁশে নৃত্যের গান
  • যশোরের ঢাল-সড়কির লড়াইয়ের গান
  • ঝুমুর নৃত্যের গান
  • কাঠি নৃত্যের গান ইত্যাদি ইত্যাদি। 
তাঁর সেই কাজের পরিধি দেখলে আমাদের বিস্ময়ের সীমা থাকে না


# গুরুসদয় দত্ত ঃ লোকশিল্প সংগ্রাহক

গুরুসদয় দত্তের আরেকটি পরিচয়ের কথা এই আলোচনায় না উল্লেখ করলে এই আলোচনাটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবেই। আমি যে কথাটা বলতে চাইছি তা হল এই যে, তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ লোকশিল্প সংগ্রাহক, এমন একজন সংগ্রাহক যিনি প্রথম, সম্ভবত প্রথম, বাংলার কুলীনশিল্প সমাজে সাথে, বাংলার প্রতিষ্ঠিত শিল্পসমাজের সাথে বাংলার ব্রাত্য লোকোশিল্পের পরিচয় করিয়ে দেন

মোটামুটি ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত, এই ১১ বছর সময়ের মধ্যে তিনি অখন্ড বাংলার নানা স্থান থেকে প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশি বাংলার শিল্পের নিদর্শন সংগ্রহ করেছিলেন, যার মধ্যে ছিল  

  • পটে আঁকা চিত্রকর্ম
  • নকশিকাঁথা
  • দারু-ভাস্কর্য
  • পুতুল
  • গৃহস্থালির সরঞ্জাম
  • ধাতুর তৈরি ভাস্কর্য
  • মুখোশ, বাদ্যযন্ত্র
  • পুঁথি
  • দেবদেবীর মূর্তি
  • মাটির পাত্র ইত্যাদি ইত্যাদি 
কলকাতায় এক প্রদর্শনীতে তাঁর সংগ্রহ দেখানো হয়েছিল, আর তাই দেখে বুদ্ধিজীবী শিল্পমহলে রীতিমতো বিশাল সাড়া পড়ে গিয়েছিল প্রখ্যাত শিল্প-সমালোচক শাহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেছিলেন, গুরুসদয় দত্ত  "এই বিশাল জ্ঞানভান্ডার আমাদের শিক্ষিতজনদের দৃষ্টিগোচরে আনা ছাড়াও তিনি, যে বাঙালি শিল্পধারা, যা প্রাথমিক সাফল্যের পর কল্পনাহীনতা ও একঘেয়েমিতে পরিণত হয়েছে, তাতে শক্ত নাড়া দেওয়ার জন্যেও আমাদের ধন্যবাদার্হ।"

তাঁর এই বিশালসংগ্রহকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে ১৯৬৩ সালে গড়ে উঠেছে গুরুসদয় সংগ্রহশালা, যা পূর্ব ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি লোকশিল্প সংগ্রহশালা বলে আজ সুপরিচিত


# গুরুসদয় দত্তঃ চাই কায়মনোবাক্যে অনুসরণ 

দুঃখের কথা কি বলব, কয়েক বছর আগেই খবরের কাগজে দেখেছিলাম, এই গুরুসদয় সংগ্রহশালা ভয়ানকভাবে বিপন্ন। কেন্দ্র বলুন বা রাজ্য বলুন -- কোন সরকারের মধ্যেই এই সংগ্রহশালাটিকে পুনরুজ্জীবিত করার কোন উদ্যোগ আমরা দেখতে পাই না, যেটা অত্যন্ত দুঃখের এবং দুর্ভাবনার। পাশাপাশি আপনি দেখবেন যে গ্রামবাংলায় যদিও বা কিছুটা ব্রতচারী সংস্কৃতি লক্ষ্য করা যায়, কিন্তু শহরাঞ্চলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে ব্রতচারী অনুশীলন করার কোন চিহ্ন আজকাল আর খুঁজে পাওয়া যায় না

মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যে বছর থেকে ফিজিক্যাল এডুকেশনকে অ্যাডিশনাল সাবজেক্ট হিসেবে ট্রিট করতে শুরু করল, লক্ষ করে দেখবেন, সে বছর থেকেই যেন স্কুলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে পিটি-প্যারেডের পাশাপাশি ব্রতচারী -- এইরকম কার্যক্রমগুলি ধীরে ধীরে যেন অদৃশ্য হতে শুরু করলসত্যি কথা বলতে কি, যখন কোন জাতি তার নিজস্ব সংস্কৃতিকে, নিজস্ব ঐতিহ্যকে ভুলতে শুরু করে, অচিরেই সেই জাতিকে অনির্দিষ্ট এক বিপন্নতার মুখোমুখি হতে হয়। ইতিহাস কিন্তু তাই বলে।

 আমাদের চারিপাশে আজ সেই বিপন্নতা। এই অদ্ভুত আঁধারে গুরুসদয় দত্ত, যাঁর মানবপ্রেম ও দরদী মন মানবসমাজকে আপ্লুত করেছিল, যাঁর জীবনদর্শন, যাঁর বিচার-বুদ্ধি-জ্ঞান মানবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, সেই প্রাতঃস্মরণীয় মানুষটির জীবনের কর্মধারা, কর্মপদ্ধতিকে কায়মনোবাক্যে আমাদেরকে অনুসরণ করতেই হবে। আর এটাই কিন্তু সময়ের অন্যতম দাবি

এই রচনাটি শেষ করার আগে আসুন আমরা একবার চট করে দেখে নিন গুরুসদয় দত্তের জীবনপঞ্জি

  • Ø  জন্ম ১৮৮২ সালের ১০ই মে
  • Ø  জন্মস্থানঃ শ্রীহট্ট জেলার করিমগঞ্জ সাব ডিভিশনের অন্তর্গত বিরশ্রী গ্রাম
  • Ø  বাবাঃ রামকৃষ্ণ দত্তচৌধুরী
  • Ø  মাঃ আনন্দময়ী দেবী
  • Ø  পড়াশোনাঃ ১) প্রথমে বিরশ্রী গ্রামের মাইনর স্কুলে   ২) সিলেট শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ৩)  শ্রীহট্টের গভর্নমেন্ট কলেজ
  • Ø  ১৯০১ সালে এফ.. পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন তিনি
  • Ø  ১৯০৩-এ উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি বিলেত যান সেখানে কেমব্রিজের ইমানুয়েল কলেজে ভর্তি হন।
  • Ø  ১৯০৪ সালে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস বা আইসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ব্যারিস্টারি পরীক্ষাতেও সসম্মানে উত্তীর্ণ হন
  • Ø  ১৯০৫-এ দেশে ফিরে আসেন এবং মহাকুমা শাসক পদে তার কর্মজীবনের সূত্রপাতইংরেজ সরকারের অনুগত ছিলেন না বলে তিনি জীবনে বহুবার বহু জায়গায় বদলি হয়েছেন এই বছরেই তিনি বিশিষ্ট সমাজসেবী সরোজনলিনী দত্তকে বিয়ে করেন।
  • Ø  ১৯১৮ সালে বীরভূম জেলায় তিনি পল্লী উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিলেন যা চতুর্দিকে সাড়া ফেলে দিয়েছিল
  • Ø  ১৯২৪ সালে তিনি ব্রিটিশ ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে আন্তর্জাতিক কৃষি প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন
  • Ø  ১৯২৫ সালে বঙ্গলক্ষী নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন  এই সময় তিনি তার প্রয়াত স্ত্রীর নামে দুটি সমাজ কল্যাণকর প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। একটির নাম সরোজনলিনী শিক্ষা সমিতি, অন্যটির নাম সরোজনলিনী নারীমঙ্গল সমিতি।
  • Ø  ১৯২৮ সালে বামুনগাছি রেলওয়ে ওয়ার্কশপের শ্রমিকদের উপর পুলিশের গুলিচালনোর ঘটনার তদন্ত করে তিনি বৃটিশ বিরোধী ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিলেন।  সেই বছরেই তার লেখা বই পল্লী সংস্কার ও সংগঠন প্রকাশিত হয়।
  • Ø  ১৯২৯ সালে গ্রামের ডাক' নামে পল্লী উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন
  • Ø  ১৯৩০ সালে গান্ধীবাদী প্রতিবাদীদের উপর জারি করা প্রশাসনিক হুকুম না মানার জন্য তাঁকে বীরভূমে বদলি করে দেওয়া হয়। 
  • Ø  ১৯৩১ সালে বঙ্গীয় পল্লী সম্পদ রক্ষা সমিতি নামে সংগঠন তৈরি করলেন  একই বছরে তাঁর লেখা বই 'বাংলার সামরিক ক্রিয়া' প্রকাশিত হয়।
  • Ø  ১৯৩২ সালে বাংলা তথা সারা ভারতবর্ষ জুড়ে শুরু করলেন তার   ঐতিহাসিক ব্রতচারী আন্দোলন।  সে বছরে প্রকাশিত হয় তাঁর আরেকটি বই 'পটুয়া'
  • Ø  ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত হলো তার অন্যতম উল্লেখযোগ্য দুটি বই নাম 'ব্রতচারী সখা' এবং 'Indian Folk Dance and Folk Song Movement'।
  • Ø  ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত হলো তার সবচাইতে উল্লেখযোগ্য বই 'ব্রতচারী মর্মকথা'।
  • Ø  ১৯৩৯ প্রকাশিত হল তার বিখ্যাত বই 'পটুয়া সঙ্গীত'।
  • Ø  ১৯৪০ সালে সুদীর্ঘ ৩৫ বছর চাকরি করার পর অবসর গ্রহণ করলেন। 
  • ১৯৪১ সালে প্রকাশিত হলো তার আরেকটি বই 'ব্রতচারী পরিচয়'।
  • Ø  ১৯৪১ সালের ২৫শে জুন মাত্র ৫৯ বছর বয়সে চিরতরে থেমে গেল এই মহাজীবনমৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা আরো কয়েকটি বই।
  • Ø  ১৯৪২ঃ 'Bratachari its aim and meaning'
  • Ø  ১৯৫৪ঃ 'The Folk Dances of Bengal'
  • Ø  ১৯৬৬ঃ 'শ্রীহট্টের লোকসংগীত'
  • Ø  ১৯৯০ঃ  'Folk Art and Crafts of Bengal'
  • Ø  ১৯৯৪ঃ 'বাংলার বীরযোদ্ধা রায়বেঁশে'

 ................................................................................................................................... 

তথ্যসূত্র:

  • ) বাংলার লোকশিল্প ও লোকনৃত্য By গুরুসদয় দত্ত
  • ) ব্রতচারী সখা By গুরুসদয় দত্ত
  • ) গুরুসদয় দত্ত By সববাংলায়
  • ) ইউটিউব ভিডিও: 'Gurusaday Dutta' (4 parts) From ইউটিউব চ্যানেল : ‘Manojit Adhikary'
  • ) নির্বাচিত সেরা বাঙালি By অলক কুমার সেন
  • ) গুগল       
Copyright : The Galposolpo

Comments

Popular posts from this blog

সাধক কমলাকান্ত ভট্টাচার্য : জীবনী বা জীবন কাহিনী / Sadhak Kamalakanta Bhattacharya Life Story or Biography

অদ্বৈত মল্লবর্মণ এক অসামান্য নদীর নাম : অসামান্য জীবনী / Adwaita Mallabarman Life Story

অতুলপ্রসাদ সেন ও নিষিদ্ধ সম্পর্কের গল্প / Atulprasad Sen Life Story on Forbidden Relationship