শিশু দিবসের বক্তব্য : সময় ও ভাবনা / Children's Day Speech in Bengali : History and Significance
শিশু দিবসের বক্তব্য : সময় ও ভাবনা / Children's Day Speech in Bengali : History and Significance
চলতি বছরের অর্থাৎ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে দেশের সব লিডিং নিউজ পেপারগুলিতে প্রকাশিত হয়েছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর অ্যানুয়াল স্ট্যাটিসটিকস-সহ ক্রাইম রিপোর্ট। তাতে কী দেখা গেল? শিশুদের বিরুদ্ধে ক্রাইম --- সে বিষয়ে কিন্তু একটা পরিষ্কার চিত্র আমাদের সামনে ফুটে উঠলো। চলুন, এক ঝলক সেই রিপোর্টটি একবার দেখে নেওয়া যাক।
#
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর অ্যানুয়াল রিপোর্ট ২০২২ অনুযায়ী ২০২১ সালে crime against child মোট case registered হয়েছে ১,৪৯,৪০৪টি। তার মধ্যে Pocso আইনে sexual offences including child rape case মোট হয়েছে ৫৩, ৮৭৪টি।
পাশাপাশি, তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে crime against child মোট case registered হয়েছিল ১,২৮,৫৩১টি , যেখানে sexual offences including child rape case মোট হয়েছিল ৪৭,২২১টি।
রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে crime against child বেড়েছে 16.2% ....
#
যদিও এ বছরের অর্থাৎ ২০২২ সালের ক্রাইমের স্ট্যাটিসটিক্স এখনো প্রকাশিত হয়নি, প্রকাশিত হবে ২০২৩ সালে, তা নিশ্চিতভাবে অনুমান করা যায় যে, সেই আসন্ন রিপোর্টে দেখা যাবে, শিশুদের বিরুদ্ধে ক্রাইম সারা দেশজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর স্বীকার করেছে যে, আমাদের দেশে শিশুদের বিরুদ্ধে যে ক্রাইমগুলি হয়, সেই ক্রাইমগুলির মধ্যে 71% ক্রাইম, পারিবারিক সম্মানহানির ভয়ে, সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে, ব্যক্তিগত আতঙ্কে, সমষ্টিগত অত্যাচারের ভয়ে থানায় রিপোর্টই হয় না, রেজিস্টার্ডই হয় না।
সারা দেশজুড়ে শিশুদের জগতের অবস্থাটা যখন এতটাই ভয়াবহ, এতটাই উদ্বেগের, এতটাই আশঙ্কাজনক, তখন ১৪ই নভেম্বরের শিশুদিবস কিন্তু আমাদের জীবনে অত্যন্ত অর্থবহ হয়ে ওঠে, কারণ এই শিশুদিবস আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় বহু তাৎপর্যপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
সেই আলোচনায় নিশ্চয়ই যাবো, কিন্তু তার আগে আপনাদের কাছে শিশু দিবস সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য রাখতে চাই।
শিশু দিবসের বক্তব্য : সময় ও ভাবনা / Children's Day Speech in Bengali : History and Significance ----- এই আলোচনা ভিডিওতে দেখতে নিচের ভিডিওতে ক্লিক করুন:
দেখুন, ১৯৬৪ সালে আমাদের দেশের একটা দুঃখজনক ঘটনা ছিল, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জহরলাল নেহেরু সে বছর ২৭শে মে প্রয়াত হন। ভারতবর্ষের অন্যতম উজ্জ্বল এই নক্ষত্র, এই স্বাধীনতার সংগ্রামী, রাজনীতিক হিসেবে কতখানি সফল ছিলেন তা নিয়ে বহুজনের বহুমত আছে, বহু বিতর্ক আছে। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড , তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রে বিতর্কিত হলেও এ কথা এক বাক্যে শত্রু-মিত্র-সমালোচকরা সকলেই স্বীকার করেন যে, পন্ডিত জহরলাল নেহেরু ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ভীষণই ভালোবাসাতেন। ছোটদের সঙ্গে তাঁর একটা গভীর ইমোশনাল বন্ডিং ছিল। তাঁর মত দেশের প্রথম সারির এক নেতা, ছোটদের জগতকে নিজের মত করে বুঝতে চাইছেন, জানতে চাইছেন, ছোটদের জগৎকে তৈরি করতে চাইছেন --- এই ঘটনা ছিল এক কথায় অভূতপূর্ব। ভালোবাসায়, আন্তরিকতায় তিনি অচিরেই ছোটদের কাছে চাচা নেহেরু বলে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।
১৯৬৪ সালের ২৭শে মে পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর মৃত্যুর পর ভারত সরকার তার সম্মানার্থে ওই বছরেই ২০শে নভেম্বরের পরিবর্তে ১৪ই নভেম্বরে শিশুদিবস পালন করতে উদ্যোগী হয়। সে বছরেই সরকারিভাবে ঘোষণা করা হল যে, এবার থেকে শিশুদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব, বন্ধু পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর প্রতি সম্মানার্থে ২০ শে নভেম্বরের পরিবর্তে ১৪ই নভেম্বরে শিশুদিবস পালন করা হবে। প্রসঙ্গত এখানে বলা দরকার যে, পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর জন্মদিন ১৪ই নভেম্বর --- ১৮৮৯ সালের ১৪ই নভেম্বরে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
#
তাহলে বিষয়টা এমনই দাঁড়ালো যে, আমাদের দেশের শিশুদিবসের দুটি গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য আছে। এক. শিশুদিবসে শিশুদের সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে জনমানসে চেতনার বিকাশ ঘটানো, আর দুই. শিশুদিবস পালনের মধ্যে দিয়ে দেশাত্মবোধের উদযাপন করা, কেননা শিশু দিবস পালন মানেই দেশের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর জন্মদিন পালন করা। সুতরাং শিশুদিবস পালন করা একদিকে যেমন শিশুদের প্রতি দায়িত্ববোধের পরিচায়ক, তেমনি অন্যদিকে তা দেশাত্মবোধেরও পরিচায়ক।
আমরা সারা বছরই শিশুদের যত্ন করি প্রতিপালন করি, তাদের সুবিধা অসুবিধার দিকে লক্ষ্য রাখি, তাদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করি। শিশুদিবসে এই কাজগুলি হয়তো আরেকটু অতিরিক্ত মনোযোগ সহকারে আমরা করে থাকি।
কিন্তু শিশুদিবস মানে কিন্তু শুধুই তা নয়, আসলে শিশুদিবসের একটা একটা গভীর বহুমাত্রিক ব্যাপ্তি আছে, সমাজ জীবনে তার বহুমাত্রিক অভিঘাত আছে। আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, এই দিনে সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, সভাসমিতির মাধ্যমে শিশুদিবস পালন করার সময় উঠে আসে বহু প্রাসঙ্গিক আলোচনা, বহু গবেষণা, শিশুদের উন্নয়নে নতুন নতুন পথের দিশা, আয়োজিত হয় মূল্যবান সেমিনার, প্রকাশিত হয় বহু বিদগ্ধ মানুষের শিশুদের নিয়ে তাদের মহামূল্য চিন্তাভাবনা, প্রকাশিত হয় শিশুদের নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা, উঠে আসে শিশুদেরকে রক্ষার জন্যে নতুন নতুন আইনের ভাবনা-চিন্তা ----- আর এসব নিয়েই শিশুদিবস যেন হয়ে ওঠে এক অনন্য সাধারণ জাতীয় দিবস --- national day। বলাবাহুল্য,এখানেই শিশু দিবসের গভীর তাৎপর্য এবং গুরুত্ব।
#
পন্ডিত জহরলাল নেহেরু শিশুদের যত্ন নেওয়া সম্পর্কে একটি অত্যন্ত দামী কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন:
"The children of today will make India of tomorrow. The way we bring them up will determine the future of the country."
অর্থাৎ 'আজকের শিশুরাই আগামী ভারতবর্ষ গড়বে। যে উপায়ে আমরা শিশুদেরকে লালনপালন করি, সেই উপায় গুলি নির্ধারণ করবে দেশের ভবিষ্যৎ।'
মূলত পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর এই বিখ্যাত উক্তিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় শিশুদিবসের যাবতীয় গুরুত্ব, তাৎপর্য, শিশুদিবসের স্বপ্ন।
#
ফরাসি দার্শনিক রুশো বলেছিলেন, শিশু জন্ম মুহূর্তে থাকে পবিত্র ও নির্দোষ। জন্ম থেকেই সে পরনির্ভরশীল, বড় অসহায়। জন্মের পর প্রথম পাঁচ বছর হল তার সারা জীবনের ক্রমবিকাশের মূল ভিত্তি।
আপনারা সকলেই জানেন যে, শিশুর ক্রমবিকাশে তিনটি ক্ষেত্রের গুরুত্ব অপরিসীম ----- এক. শিশুর পরিবার দুই. তার স্কুল এবং সবশেষে তিন. শিশু যে সমাজে বেড়ে ওঠে, সেই সমাজ।
আপনি যদি পরিবারের কথা বলেন, তাহলে আপনাকে মানতেই হবে যে, শিশুর প্রতিপালনে মা-বাবার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, আমাদের দেশে শিশু প্রতিপালনে মা-বাবাদের জন্য প্রথাগত কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই।
এখনকার এই জটিল সময়ে যৌথ পরিবার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ায় ছোট ছোট পরিবারে নতুন মা-বাবাদের কাছে সমস্যা আরো জটিল হয়েছে। আগে যৌথ পরিবারে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা তাঁদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান পরিবারের নতুন মা-বাবাদের দিতে পারতেন। এভাবে অতীতে সন্তান প্রতিপালনে একটা নির্ভরযোগ্য ধারা গড়ে উঠেছিল। আজ এই ধারা প্রায় বিলীন। অথচ এমন একটা জরুরী বিষয় নিয়ে কোন পরিপূরক ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। আমি তো মনে করি, আমাদের দেশে শিশুকে বড় করার লক্ষ্যে মা-বাবাদেরও প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি।
#
আপনি যদি স্কুলের দিকে তাকান, তাহলে দেখতে পাবেন, ছেলেমেয়েদের পরিচর্যার জন্য, তাদেরকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা সেখানে আছে, কিন্তু তার কোন প্রয়োগ নেই । দুঃখের কথা এটাই যে, অধিকাংশ শিক্ষক শিক্ষিকারা শুধুমাত্র চাকরির জন্য অথবা চাকরি ক্ষেত্রে ইনক্রিমেন্টের জন্য যান্ত্রিকভাবে এই প্রশিক্ষণটি নিয়ে থাকেন। বিএড কোর্স বলুন বা ডি এল এড কোর্স বলুন, অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা বলেন, ওসব হলো তাত্ত্বিক বিষয়। প্র্যাকটিক্যালি ওসব প্রয়োগ করা সম্ভব নয়, কারণ স্কুলে কোন পরিকাঠামোই নেই।
তাদের এই অনুযোগ কিন্তু অবহেলা করার বিষয় মোটেই নয়। এটা সত্যি। তবে নেই নেই করে যেটুকু পরিকাঠামো আছে, যেটুকু ইনফ্রাস্ট্রাকচার আছে, তাতে যেটুকু প্রয়োগ করলে শিশুদের প্রতিপালন করা, তাদেরকে শিক্ষাদান করা সহজসাধ্য হয়, যুক্তিযুক্ত হয়, তাও সেভাবে প্রয়োগ করা হয় না।
শিশুদের প্রতি দায়বদ্ধতা সুনিশ্চিত করার লোক্ষ্যে ২০০৯ সালে চালু হলো রাইট টু এডুকেশন অ্যাক্ট। আপনি যদি সেই অ্যাক্ট পড়েন, আপনি দেখতে পাবেন, অসাধারণ সব সুন্দর সুন্দর চিন্তা-ভাবনা সেখানে আছে।
কিন্তু সর্ষের মধ্যেই ভূত। শিশুদের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য এই আইন প্রয়োগ করবেন যারা, তারাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লজ্জাজনক ভাবে নিষ্ক্রিয় বা কর্তব্যকর্ম পালনে ভীষণই কৌশলী।
একটি উদাহরণ দিলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, আমি কি বলতে চাইছি। আইনে বলা হয়েছে যে, ৬ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে যে কোন রকম আর্থিক বাধা থাকলে বা আসলে তা অগ্রাহ্য করা হবে। ক্লাস ফাইভ থেকে ক্লাস এইট পর্যন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে বছরে ফি হিসাবে সর্বাধিক ২৪০ টাকা ধার্য করা হয় এবং ঘোষণা করা হয় যে, ভর্তির সময় শিশুদের কাছ থেকে কোন ক্যাপিটেশন ফি নেওয়া হবে না।
কিন্তু আমি-আপনি-আমরা সবাই বাস্তব চিত্রটা নিশ্চয়ই জানি। ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে আমরা দেখেছি যে এই বঙ্গে অধিকাংশ স্কুলে ভর্তি ফি ক্লাস ফাইভ থেকে এইট পর্যন্ত ২৪০ টাকার অনেক বেশি। ক্যাপিটেশন ফি নেই, অথচ কম্পিউটার ফি, ডোনেশন ইত্যাদি সবমিলিয়ে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের দেয় টাকার পরিমান কোথাও ৫০০টাকা, কোথাও ৮০০ টাকা, কোথাও বা হাজার ছাড়িয়ে বারোশো-তেরোশো-পনেরশ।
সত্যি কোথায় আইন, আর কোথায় তার বাস্তবায়ন!
#
এবার আসুন সমাজের দিকে। শিশুর প্রতিপালনে জন্য সমাজের ভূমিকা অপরিসীম। অথচ যে সমাজের মধ্যে আজকের শিশুরা বেড়ে উঠছে, সেই সমাজ বহু আগে থেকেই ক্ষয়প্রাপ্ত। ত্রুটিপূর্ণ সামাজিক এক ব্যবস্থার মধ্যে বড় হচ্ছে আমাদের এই শিশুরা, দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিকরা। সমাজে প্রাপ্তবয়স্কদের যাবতীয় দুর্নীতি, অন্যায় অবক্ষয়কে প্রত্যক্ষ করতে করতে বড় হচ্ছে আমাদের ছোটরা। প্রায়শই তারা বড়দের লোভ লালসা হিংসার শিকার। অকল্পনীয় যৌন অত্যাচারের শিকার।
শিশুদের মধ্যেও প্রকট থেকে প্রকটতর হয়ে উঠছে প্রিভিলেজড এবং আনপ্রিভিলেজড সেকশন। প্রিভিলেজড বা সুবিধাপ্রাপ্ত শিশুরা বুঁদ হয়ে আছে কম্পিউটার গেমস, মোবাইল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গেজেট নিয়ে। শিশু নয়, যেন তৈরি হচ্ছে জ্যান্ত সব রোবট। প্রতিযোগিতার র্যাট রেসের যাতাকলে তাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নরম-স্নিগ্ধ-স্বপ্নের শৈশব।
অন্যদিকে আনপ্রিভিলেজড সেকশন বা সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা প্রতিনিয়ত মুখোমুখি হচ্ছে খিদে, অপুষ্টি, অশিক্ষা, অত্যাচার, মৃত্যু --- বিভিন্ন জ্বলন্ত সমস্যার। সামাজিক এই অব্যবস্থা প্রতিনিয়ত খুন করে চলেছে তাদের শৈশবকে।
তাহলে এবার বলুন, যে দেশে ১ কোটি ১০ লক্ষের উপর ছেলেমেয়েরা রাস্তায় ঘুমায়, ৩ কোটি ২০ লক্ষ ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায় না, ১ কোটির উপর ছেলেমেয়েরা শিশু শ্রমিক হিসাবে পরিশ্রম করে, বছর বছর হাজার হাজার ছেলেমেয়ে সেক্সুয়ালি অ্যাবিউজড হয়, সে দেশ কেমন করে, কিভাবে শক্তিশালী একটা দেশ হয়ে উঠবে!
আজকের শিশু দিবসে এই প্রশ্নগুলিই তো আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। সংবেদনশীল মানুষকে এই প্রশ্নগুলোই তো চিন্তিত করে তোলে।
তবে যত বেশি এই প্রশ্নগুলিকে বিচার করা যাবে, এই প্রশ্নগুলির উত্তরকে খোঁজা হবে, আমরা কিন্তু ততই সমাধানের দিকে এগিয়ে যাব, তত বেশি আমরা আমাদের সঠিক দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে পারব। এটাই আমি বিশ্বাস করি।
আগামী প্রজন্মের বিকশিত হওয়ার পথকে প্রশস্ত করতে হলে, ভবিষ্যতের দেশকে নিপুণভাবে গড়ে তুলতে হলে, দেশকে মজবুত কাঠামোর উপরে দাঁড় করাতে হলে, আমাদের যে কর্তব্য কর্ম --- শিশুদের হৃদয় দিয়ে ভালোবাসা, তাদের যত্ন করে প্রতিপালন করা --- তা সঠিকভাবে পালন করতেই হবে।
এটাই শিশু দিবসে আমাদের কাছে শিশুদের অনুচ্চারিত এক দাবি। অনুচ্চারিত, কিন্তু অত্যন্ত জোরালো এক দাবী।
আসুন, এই বিশ্বকে শিশুদের বাসযোগ্য করে গড়ে তুলবার জন্য আমরা সবাই কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতায় কন্ঠ মিলিয়ে বলি:
“চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ,
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি-
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।“
........................................................................
শিশু দিবসের বক্তব্য : সময় ও ভাবনা / Children's Day Speech in Bengali : History and Significance ----- এই আলোচনা ভিডিওতে দেখতে নিচের ভিডিওতে ক্লিক করুন:
তথ্যঋণ:
১) The Statesman
২) The Indian Express
৩) NCRB
৪) উইকিপিডিয়া
Copyright: The Galposalpo
Comments
Post a Comment