গুরু নানক : মুসলমান নাকি হিন্দু? : আশ্চর্য জীবন কাহিনী / Guru Nanak Life Story : Hindu or Muslim?

গুরু নানক : মুসলমান নাকি হিন্দু? : আশ্চর্য জীবন কাহিনী / Guru Nanak Life Story : Hindu or Muslim?


   গুরু নানক সম্পর্কে বহু চর্চিত বিতর্কিত প্রশ্ন এটাই যে, গুরু নানক কি মুসলিম ছিলেন? নাকি হিন্দু?
   শোনা যায় যে, গুরু নানকের মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহের সৎকার নিয়ে তাঁর হিন্দু ও মুসলমান শিষ্যদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক ও গন্ডগোল হয়েছিল। গুরুকে শেষ দর্শন করার জন্য সবাই যখন গুরুর মৃতদেহের আবরণকে সরিয়ে দিলেন, অপার বিস্ময়ে সবাই লক্ষ্য করলেন, আবরণের তলায় নানকের মৃতদেহের কোন চিহ্ন নেই; সেখানে রয়েছে অজস্র ফুল আর পাতার সমাহার। 
   অচিরেই অপ্রত্যাশিতভাবে হিন্দু-মুসলমান শিষ্যদের সেই দ্বন্দ্ব-সংঘাত --- তা ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। শোনা যায় যে, মৃতদেহের সেই আবরণটিকে দ্বিখন্ডিত করে, একখণ্ড নিয়ে শিখ এবং হিন্দুরা তাঁদের প্রথা অনুযায়ী সৎকার করেন, আর অন্য খন্ডটিকে নিয়ে মুসলমানরা তাঁদের প্রথামত মাটির গর্ভে তা সমাহিত করেন।
    পরবর্তী সময়ে, রাবি নদীর তীরে, গুরু নানকের তিরোধানের জায়গায় একটি মন্দির এবং তার পাশে একটি সমাধি নির্মাণ করা হয়েছিল। অবশ্য পরবর্তীকালে ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে নাকি তা বিলীন হয়ে যায়।

    যাইহোক, বহু হিন্দুরা যেমন বলেন, গুরু নানক হিন্দু ছিলেন, তেমনি বহু মুসলিমরাও বলেন, গুরু নানক মুসলিম ছিলেন। শিখরা কিন্তু নির্দ্বিধায় বলেন, গুরু নানক হিন্দুও নন, মুসলিমও নন; তিনি হলেন শিখ।

গুরু নানকের আশ্চর্য জীবন কাহিনী : তিনি মুসলিম নাকি হিন্দু? / Guru Nanak Life Story: Is he Muslim or  Hindu? ----- এই লেখাটিকে ভিডিওতে দেখতে নিচের ভিডিওতে ক্লিক করুন: 

   গুরু নানক সম্পর্কে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। কোনটি সত্যি, কোনটি মিথ্যে --- সে বিষয়েও যথেষ্ট বিতর্ক আছে। তবে যে গল্পটি আমার কাছে বেশ আকর্ষণীয় মনে হয় সেটা হল এই যে, মক্কায় গিয়ে তিনি যখন বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখন তাাঁর পা ছিল কাবার দিকে। 

  তা দেখে একজন বললেন, আপনি আল্লাহর ঘরের দিকে পা দিয়ে রেখেছেন। পা সরিয়ে নিন।

   বৃদ্ধ নানক বললেন, ভাই, আমি খুব ক্লান্ত। আপনিই সরিয়ে দিন না। আমার পা সেই দিকে সরিয়ে দিন, যেদিকে আল্লাহর কোন ঘর নেই।

   এ কথা শোনার পর সেই মুসলিম ভদ্রলোক নানকের পা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ সেই ভদ্রলোকের এরকমটাই মনে হলো, যেদিকে তিনি নানকের পা ঘুরিয়ে দিয়েছেন, সেদিকেই কাবা যেন ঘুরে গেছে। ভদ্রলোক নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। তিনি নানকের কথাটির অর্থ উপলব্ধি করলেন। এই বিশ্ব ঈশ্বরের সৃষ্টি। এখানে এমন কোন দিক নেই যেখানে ঈশ্বর নেই। ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান।

    এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষদের মধ্যে একজন হলেন গুরু নানক। তিনি ছিলেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক এবং শিখ ধর্মের দশজন গুরুর মধ্যে প্রথম গুরু। ইতিহাস থেকে তার সম্পর্কে যা জানা গেছে, তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এটাই যে, তিনি জীবদ্দশায় প্রচুর প্রচুর দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। প্রধানত দক্ষিণ এশিয়ার আরব দেশগুলোতে তিনি বিস্তর ঘোরাঘুরি করেছেন। বাগদাদ, মক্কা, মুলতান, এমন কি হরিদ্বার থেকে শ্রীলংকা --- ভারতবর্ষের প্রায় প্রত্যেক তীর্থস্থান তিনি পরিভ্রমণ করেছিলেন। যদিও আধুনিক বহু ইতিহাস পণ্ডিতদের মতে, নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় গুরু নানকের দেশ ভ্রমণের স্বপক্ষে যথেষ্ট রিলায়েবল হিস্টোরিকাল এভিডেন্স পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ওইসব নির্দিষ্ট জায়গায় গুরু নানকের দেশভ্রমণ একটি বিতর্কিত বিষয়।

   তবে একটি তথ্যের কোথাও আমি কোন বিতর্ক দেখিনি। সেটা হলো অত্যন্ত অল্প বয়সে, মাত্র ২৭ বছর বয়সে তিনি সংসার ধর্ম ত্যাগ করে পৃথিবীর পথে পরিব্রাজক হিসাবে বেরিয়ে পড়েন। পরবর্তী প্রায় দীর্ঘ কুড়ি-পঁচিশ বছর তিনি কিন্তু বাড়ি ফেরেননি। এ থেকে পরিষ্কার, তিনি সত্যিই দেশভ্রমণ করেছিলেন। তবে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, সেটা নিয়ে কিন্তু বিদগ্ধ মহলে প্রশ্ন আছে, প্রশ্ন থাকতে পারে, এত অল্প বয়সে তিনি গৃহত্যাগী হলেন কেন? এর উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের যেতে হবে গুরু নানকের প্রাথমিক জীবনে। 

 পাকিস্তানের লাহোর থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরে গুজরানওয়ালা জেলার এক প্রান্তে তালওয়ান্দি বা তালবন্দী গ্রাম, সেই গ্রামেই ১৪৫৯ সালে বৈশাখ মাসে গুরু নানক জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই তালবন্দীগ্রামের পরবর্তীকালে নাম হয়, আপনারা জানেন, নানকানা সাহেব, যা শিখদের কাছে এটি অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান। গুরু নানকের বাবা ছিলেন কল্যানচাঁদ দাসবেদী, যিনি সবার কাছে মেহেতা কালু বা কালু বেদী নামে পরিচিত ছিলেন। মায়ের নাম ছিল ত্রিপদাদেবী। 

   সাংসারিক কাজকর্মে বা লেখাপড়ায় গুরু নানকের তেমন কোন আগ্রহ ছিল না। ছেলে বেলা থেকেই তিনি নির্জনে থাকতে একাকী থাকতে ভালোবাসতেন ঈশ্বর চিন্তায় নিমগ্ন থাকতে সব সময় ভালবাসতেন।

   মাতৃভাষা শিখতে গেলেন গোপাল পন্ডিতের পাঠশালায়। কিন্তু সেখানে ভাষাশিক্ষা হলো না। সংস্কৃত ভাষা শিখতে গিয়েছিলেন ব্রীজনাথ শর্মা নামে এক পন্ডিতের টোলে, সেখানে সংস্কৃত পড়া হলো না। অবশেষে, জমিদারি সেরেস্তায় কাজকর্ম পাবার জন্য সেই সময়ের কাজের ভাষা ফারসি ভাষা, রপ্ত করতে তিনি গেলেন এক মৌলবি রুকন্-উল্-উদ্দীন সাহেবের পাঠশালায়। সেখানেও সম্পূর্ণ ব্যর্থ হলেন তিনি। সর্বক্ষণ তাঁর তো ঈশ্বরের কথা, ঈশ্বরের চিন্তা, ধর্মের কথা। পড়াশুনা হবে কি করে?

   অবশেষে বিষয়-কর্মে তার মন বসছে না বলে একদিন বাবা একটা শুভদিন দেখে নানককে বিয়ে দিলেন। তাঁর তখন কিন্তু মাত্র ১৪বছর বয়েস, মতান্তরে ২৪ বছর। পাত্রী ছিলেন গুরুদাসপুর জেলার বাতালা গ্রামের সুলখনী দেবী। তাঁদের দুই ছেলে হয়, বড়জনের নাম শ্রীচাঁদ, ছোটোজনের নাম লক্ষ্মী চাঁদ। 

   গুরু নানক সংসারী হলেন ঠিকই কিন্তু, সংসার তাঁকে বেঁধে রাখতে পারল না। ঈশ্বরের চিন্তা করতে করতে তিনি উপলব্ধি করলেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তাঁকে কাজ করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে, মানুষের ভালো করতে হবে। ঈশ্বর তাঁকে সেই কাজের জন্যই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। যথারীতি সংসারের বন্ধন তার কাছে ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে এলো। 

    মাত্র ২৭ বছর বয়সে সংসার ছেড়ে তিনি পরিব্রাজকের জীবন গ্রহণ করলেন। পৃথিবীর পথে বেরিয়ে তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিজের শান্ত স্নিগ্ধ ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে আকৃষ্ট করলেন। হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মের বহু মানুষ তাঁর শরণাপন্ন হল। মুসলমানদের মধ্যে সুফি সাধক মর্দানা যেমন তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী হলেন, তেমনি বালা নামে একজন হিন্দু ভক্ত সবসময় তাঁর পাশে থাকলেন। নানকের ব্যক্তিত্ব এতটাই সুমধুর ছিল, তিনি এতটাই সর্বজনগ্রাহ্য চরিত্র ছিলেন যে, হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষজন গুরু নানককে মান্য করতেন।

    প্রসঙ্গক্রমে, এখানে একটা কথা বলে রাখা দরকার যে, নানক যে সময়ে পরিব্রাজক হিসাবে পথে নেমে পড়েছিলেন, সে সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে যে দাঙ্গা হাঙ্গামা, যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, তা দেখে গুরু নানক অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছিলেন। জাগতিক সমস্যায় দীর্ন পৃথিবীর মানুষকে তিনি সর্ব ধর্ম সমন্বয় করে একটা নতুন পথের সন্ধান দিলেন। এক উদার ধর্মবোধের ভিত্তিতে তিনি প্রবর্তন করলেন শিখ ধর্মের। হিন্দু ও মুসলিম ধর্মের অজস্র অগণিত মানুষ শিখ ধর্মে দীক্ষিত হলেন। 

    এবার ফিরে আসা যাক সেই বিতর্কিত প্রশ্নে: গুরু নানক কি মুসলিম ছিলেন?

   যাঁরা বিশ্বাস করেন, গুরু নানক মুসলিম ছিলেন, তাঁদের যুক্তিগুলি হল, নানক মুসলিমদের মতই ছিলেন একেশ্বরবাদী। তাঁর মতে, ঈশ্বর সবকিছুর স্রষ্টা। তিনি সর্বত্র বিরাজমান। আবার মুসলিমদের মতই তিনি মূর্তি পূজার বিরোধী ছিলেন। 

   তাছাড়া, ইতিহাস বলছে, গুরু নানক মক্কায় কাবাতে প্রবেশ করেছিলেন, যেখানে সেই প্রাচীনকাল থেকে অমুসলিমদের কোন প্রবেশ অধিকার নেই। অর্থাৎ কাবায় একমাত্র প্রবেশ করতে পারবেন মুসলমানরাই। সুতরাং মনে করা হয়, গুরু নানক মুসলিম ছিলেন বলেই কাবাতে তিনি প্রবেশের অধিকার পেয়েছিলেন। 

   তাছাড়া, গুরু নানক বেশিরভাগ সময়েই মুসলিম দরবেশদের মতোই ঢিলেঢালা জোব্বা পোশাক পরতেন, বহু মুসলিম সুফি-সন্ত তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুও ছিলেন। এসব বহু কারণে অনেকে মনে করেন যে, গুরু নানক আসলে মুসলিম ছিলেন।

   তবে একথাও মনে রাখা দরকার যে, গুরু নানক হিন্দুদেরও অনেক ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের আন্তরিক অনুসারী ছিলেন। হিন্দুদের মতই তিনি জন্মান্তর বাদে বিশ্বাসী ছিলেন। অর্থাৎ মৃত্যুর পর জীবের আত্মা আছে, জীবের বা মানুষের পুনর্জন্ম হয় --- এসব তিনি গভীরভাবে মানতেন, বিশ্বাস করতেন। তেমনি আবার মৃত্যুর পর মৃতদেহ দাহ করা, বিবাহিত মহিলাদের সিঁথিতে সিঁদুর পড়া ইত্যাদি শিখ ধর্মের বহু বিষয় হিন্দু ধর্মের আচার অনুষ্ঠানের সাথে নিবিড়ভাবে সঙ্গতিপূর্ণ, সদৃশ।

    তবে গুরু নানক জন্মসূত্রে যে হিন্দু ছিলেন, সে বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে কোন দ্বিমত বা কোন বিতর্ক দেখা যায়নি। মোটামুটি ভাবে সকলেই এ বিষয়ে একমত যে, গুরু নানক একটি হিন্দু পরিবারেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এক হিন্দু রমণীকে তিনি বিয়ে করেছিলেন। তাঁর দুই ছেলের নামগুলিও --- শ্রীচাঁদ ও লক্ষ্মী চাঁদ --- হিন্দু ধর্মের সাথে অর্থাৎ হিন্দু মানুষদের নামের সঙ্গে বিশেষভাবে সঙ্গতিপূর্ণ।

    তা, হিন্দু ও মুসলিমদের এই দাবি-পাল্টা দাবীর থেকে সম্মানজনক দূরত্বে দাঁড়িয়ে শিখরা কিন্তু বলছেন, গুরু নানক হিন্দুও নন, মুসলিমন নন --- তিনি শিখ। তাঁর কাবা যাওয়া সম্পর্কে শিখদের বক্তব্য এটাই যে, গুরু নানক মুসলিমদের পবিত্র স্থান কাবা, তা দেখার জন্য ভীষণ আগ্রহী ছিলেন। সেই আগ্রহের কারণেই তিনি মুসলিম ছদ্মবেশে কাবায় প্রবেশ করেছিলেন। যদিও আধুনিক ঐতিহাসিকদের মতে, গুরু নানক যে কাবায় গিয়েছিলেন, তার কোন সত্যতা আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এ কথাও শোনা যায় যে, গুরু নানক যে সময়ে কাবায় প্রবেশ করেছিলেন, বলা হয়, সেই সময়ে, সেই পঞ্চদশ শতাব্দীতে কাবায় মুসলিম অমুসলিম --- সকলেরই নাকি প্রবেশ অধিকার ছিল, অর্থাৎ সে সময়ে কাবায় ঢুকতে হলে মুসলিম হতেই হবে --- এ কথার কোন যৌক্তিকতা নেই।

    যাইহোক, হিন্দু মুসলিম শিখ --- সবার দৃষ্টিভঙ্গি জানার পর আমাদের জানা দরকার, গুরু নানক নিজের সম্পর্কে কি বলেছিলেন। নানক নিজের সম্পর্কে যা বলেছিলেন, তা গল্পের আকারে লিপিবদ্ধ করেছেন তার মুসলিম ভক্ত মর্দানা। গল্পটিতে জানা যায় যে, গুরু নানক এক সময় বলেছিলেন, এই পৃথিবীতে আমি কোন হিন্দুকেও দেখতে পাচ্ছি না; কোন মুসলমানকেও দেখতে পাচ্ছি না।  তাঁর এই প্রচার, তাঁর এইসব কথা, সেই সময়ের শাসনকর্তা নবাব দৌলতখানের কানে গিয়েছিল। এসব শুনে বিরক্ত হয়ে তিনি গুরু নানককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনি কেন বলছেন, এদেশে হিন্দুও নেই মুসলমানও নেই। তাহলে আপনি কী? আপনার পরিচয় দিন। আপনি বলুন, আপনি হিন্দু না মুসলমান?

   ধীর স্থির গুরু নানক স্মিতহাসিতে জবাব দিয়েছিলেন, দেখুন, ধর্মীয় সম্প্রদায় বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকজন, তারা পরিচালিত হয় সেই ধর্মের প্রবর্তকের উপদেশকে অনুসরণ করে। আমি কোন ধর্মীয় প্রবর্তকের উপদেশ গ্রহণ করিনি। আমি পথ চলি সেই অনাদি অনন্ত সর্বশক্তিমান পরম পুরুষের প্রর্দশিত আলোতে। তাই আমি হিন্দুও নই মুসলমানও নই।

    তা, গুরু নানকের এই বক্তব্য জানার পর ‘গুরু নানক কি মুসলিম ছিলেন, নাকি হিন্দু?' -- এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা সম্পূর্ণ অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। আমার মনে হয়, একজন মানুষ ব্যক্তিগত জীবনে হিন্দু ছিলেন নাকি মুসলিম ছিলেন --- তা সেই মানুষটির মূল্যায়নে কখনোই বিচার্য বিষয় হতে পারে না। মানুষকে পরিমাপ করতে হলে, মানুষকে বিচার করতে হলে তার কর্মকেই বিশ্লেষণ করা দরকার, বিচার করা দরকার। তাই বলব, ধর্ম নয়, কর্মই হওয়া উচিত আমাদের একমাত্র বিচার্য বিষয়। 

   সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে গুরু নানক হলেন হিন্দু-মুসলমান-শিখ -- এই সমস্ত ধর্মের ঊর্ধ্বে মানবজাতির এক মহান সন্তান – অনন্যসাধারন এক মহামানব। 

রচনাটিকে ভিডিওতে দেখতে নিচের ভিডিওতে ক্লিক করুন:

....….....................................................

তথ্যসূত্র:

১) ভারতের সাধক (৫ম খন্ড)

By শঙ্করনাথ রায়

২) বিশ্বের নির্বাচিত সাধক সাধিকা 

By পৃথ্বীরাজ সেন

৩) উইকিপিডিয়া


Copyright: The Galposalpo 





Comments

Popular posts from this blog

সাধক কমলাকান্ত ভট্টাচার্য : জীবনী বা জীবন কাহিনী / Sadhak Kamalakanta Bhattacharya Life Story or Biography

অদ্বৈত মল্লবর্মণ এক অসামান্য নদীর নাম : অসামান্য জীবনী / Adwaita Mallabarman Life Story

অতুলপ্রসাদ সেন ও নিষিদ্ধ সম্পর্কের গল্প / Atulprasad Sen Life Story on Forbidden Relationship