Posts

অদ্বৈত মল্লবর্মণ এক অসামান্য নদীর নাম : অসামান্য জীবনী / Adwaita Mallabarman Life Story

Image
This article is about : Adwaita Mallabarman Life Story (অদ্বৈত মল্লবর্মণ এক অসামান্য জীবন কাহিনী) সেদিন ছিল স্কুলের প্রথম ছাত্র ধর্মঘট। সময়টা ১৯২৭ কি '২৮ সাল। কুমিল্লা থেকে এসপি সাহেব আসছেন। আর ছাত্ররা ঠিক করেছে, তারা কিছুতেই ব্রিটিশদের পতাকা 'ইউনিয়ন জ্যাক’কে অভিনন্দন জানাবে না। ধর্মঘটের দিন স্কুল প্রায় জনমানবশূন্য। চারিদিকে চাপা উত্তেজনা। তা ফাঁকা স্কুল ঘরে কেউ কোথাও আছে কিনা দেখতে গিয়ে দেখা গেল, বড় হলঘরের এক কোনায় একজন ছাত্র ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেই চলেছে। কারণ জিজ্ঞেস করতে জানা গেল, ছাত্রটি ভীষণ ভয় পাচ্ছে, ভয় পাচ্ছে এই জন্য যে, ছাত্রদের এই ধর্মঘট চললে সে আর স্কলারশিপ পাবে না, তাঁর স্কলারশিপ চলে গেলে স্কুলে পড়ার তাঁর আর কোন সুযোগ থাকবে না। সাহিত্যিক-প্রকাশক সুবোধ চৌধুরী সেদিনের সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, ছাত্রটি ছিল ভীষণ মেধাবী। কিন্তু এতই গরিব ঘরের ছেলে যে, নিজেদের খরচে পড়াশোনা চালিয়ে যাবার কোনো সামর্থ্যই তাঁর ছিল না। শোনা যায়, পাড়ার মালোরা অর্থাৎ জেলেরা, তাঁরাই পালা করে চাঁদা তুলে ছাত্রটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে পড়তে পাঠিয়েছিল। কেন, চাঁদা তুলে কেন? আ...

জীবনানন্দ দাশ ও লাবণ্যদেবী : বিয়ের গল্প / Jibanananda Das and Labanya Debi : Marriage Story

Image
This article is about: Jibanananda Das and Labanya Debi : Marriage Story (জীবনানন্দ দাশ ও লাবণ্যদেবী : বিয়ের গল্প) তখন তিনি ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রী। হোস্টেলে থাকতেন, একদিন হঠাৎ বাড়ি থেকে ডাক আসলো। জ্যাঠামশাই অমৃতলাল গুপ্ত ডেকে পাঠিয়েছেন। হোস্টেল থেকে বাড়ি কিন্তু বেশি দূরে ছিল না। আসলে সেই বাড়িটি ছিল তাঁর জ্যাঠামশাইয়ের বাড়ি। খুব ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়ে সেই ছাত্রীটি জ্যাঠামশাইয়ের কাছেই মানুষ। তা, সেদিন জ্যাঠামশাইয়ের ডাক পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে তিনি বাড়ির দিকে রওনা দিলেন। বৃষ্টিতে তখন রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত। শাড়ি আর জুতোয় বেশ কাদাটাদা লাগিয়ে তিনি বাড়িতে উপস্থিত হলেন। জ্যাঠামশাই জানালেন, বাড়িতে একজন অতিথি এসেছেন। চা-জলখাবার দরকার। তা চা আর লুচি নিয়ে ইডেন কলেজের সেই ছাত্রীটি ঘরে ঢুকে দেখলেন ২৮/২৯ বছরের একজন ভদ্রলোক ঘরে চুপ করে বসে আছেন। গায়ের রং কালো, ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত। মুহূর্তে একবার চোখাচোখি হল। জ্যাঠামশাই বললেন, ইনি দিল্লি থেকে এসেছেন। দিল্লীর রামযস কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক। নাম-- জীবনানন্দ দাশ। তা, সেই নতুন অতিথি, তিনি কিন্তু দেখলেন, হাতে খাবারের প্লেট হাতে ঘরে উপস্থিত ...

শিশু দিবসের বক্তব্য : সময় ও ভাবনা / Children's Day Speech in Bengali : History and Significance

Image
শিশু দিবসের বক্তব্য : সময় ও ভাবনা / Children's Day Speech in Bengali : History and Significance চলতি বছরের অর্থাৎ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে দেশের সব লিডিং নিউজ পেপারগুলিতে প্রকাশিত হয়েছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর অ্যানুয়াল স্ট্যাটিসটিকস-সহ ক্রাইম রিপোর্ট। তাতে কী দেখা গেল? শিশুদের বিরুদ্ধে ক্রাইম --- সে বিষয়ে কিন্তু একটা পরিষ্কার চিত্র আমাদের সামনে ফুটে উঠলো। চলুন, এক ঝলক সেই রিপোর্টটি একবার দেখে নেওয়া যাক। # ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর  অ্যানুয়াল রিপোর্ট ২০২২ অনুযায়ী ২০২১ সালে crime against child মোট case registered হয়েছে ১,৪৯,৪০৪টি। তার মধ্যে Pocso আইনে sexual offences including child rape case মোট হয়েছে ৫৩, ৮৭৪টি। পাশাপাশি, তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে crime against child মোট case registered হয়েছিল ১,২৮,৫৩১টি , যেখানে sexual offences including child rape case মোট হয়েছিল ৪৭,২২১টি। রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে crime against child বেড়েছে 16.2% .... # যদিও এ বছরের অর্থাৎ ২০২২ সালের ক্রাইমের স্ট্যাটিসটিক্স এখনো প্রকাশিত হয়নি...

সেলিম আলি : অসামান্য পক্ষী বিজ্ঞানীর জীবন কাহিনী / Bird Lover Salim Ali Life Story

Image
সেলিম আলি : অসামান্য পক্ষী বিজ্ঞানীর জীবন কাহিনী / Salim Ali Life Story আজ যাঁর কথা বলতে চাইছি, তাঁর কথা মনে পড়লেই আজকাল আমার একটা হিন্দি সিনেমার কথা মনে পড়ে যায়। সিনেমাটির নাম হল টু পয়েন্ট জিরো। আপনারা জানেন, ভীষণই হিট ছবি। ছবিতে পক্ষীরাজন নামে একজন পক্ষী বিশারদের চরিত্র আছে, যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা অক্ষয় কুমার। Indiatimes-সহ বেশ কয়েকটি ইংরেজি কাগজে লেখা হয়েছিল, পক্ষীরাজন চরিত্রটি ভারতবর্ষের একজন বিখ্যাত পক্ষীবিশারদের পক্ষীপ্রেমকে অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে, যদিও সেই চরিত্রটিকে গল্পের খাতিরে ভিলেনের চরিত্রে পরিবর্তন করা হয়। তা, ভারতের সেই পক্ষীবিশারদ, শুধু ভারতের নয়, ভারতীয় উপমহাদেশের সেই বিখ্যাত পক্ষীবিশারদ হলেন সালিম আলি। সালিম আলি নাম হলেও তিনি সেলিম আলি বলেই সবার কাছে সুপরিচিত।  আজ ১২ই নভেম্বর, আজকের মতই একটি দিনে ১৮৯৬ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আজ তার সম্পর্কেই কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। # খুব ছোটবেলায় এয়ারগান হাতে পাখি শিকার করতে গিয়ে সেলিম আলি চড়ুই পাখির প্রেমে পড়েছিলেন। সেই প্রেম তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। মামা আমির...

গুরু নানক : মুসলমান নাকি হিন্দু? : আশ্চর্য জীবন কাহিনী / Guru Nanak Life Story : Hindu or Muslim?

Image
গুরু নানক : মুসলমান নাকি হিন্দু? : আশ্চর্য জীবন কাহিনী / Guru Nanak Life Story : Hindu or Muslim?    গুরু নানক সম্পর্কে বহু চর্চিত বিতর্কিত প্রশ্ন এটাই যে, গুরু নানক কি মুসলিম ছিলেন? নাকি হিন্দু?    শোনা যায় যে, গুরু নানকের মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহের সৎকার নিয়ে তাঁর হিন্দু ও মুসলমান শিষ্যদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক ও গন্ডগোল হয়েছিল। গুরুকে শেষ দর্শন করার জন্য সবাই যখন গুরুর মৃতদেহের আবরণকে সরিয়ে দিলেন, অপার বিস্ময়ে সবাই লক্ষ্য করলেন, আবরণের তলায় নানকের মৃতদেহের কোন চিহ্ন নেই; সেখানে রয়েছে অজস্র ফুল আর পাতার সমাহার।     অচিরেই অপ্রত্যাশিতভাবে হিন্দু-মুসলমান শিষ্যদের সেই দ্বন্দ্ব-সংঘাত --- তা ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। শোনা যায় যে, মৃতদেহের সেই আবরণটিকে দ্বিখন্ডিত করে, একখণ্ড নিয়ে শিখ এবং হিন্দুরা তাঁদের প্রথা অনুযায়ী সৎকার করেন, আর অন্য খন্ডটিকে নিয়ে মুসলমানরা তাঁদের প্রথামত মাটির গর্ভে তা সমাহিত করেন।     পরবর্তী সময়ে, রাবি নদীর তীরে, গুরু নানকের তিরোধানের জায়গায় একটি মন্দির এবং তার পাশে একটি সমাধি নির্মাণ করা হয়েছিল। অবশ্য প...

আব্বাসউদ্দিন আহমেদ : অসামান্য শিল্পীজীবনের গল্প / Abbasuddin Ahmed Unknown Life Story

Image
  আব্বাসউদ্দিন আহমেদ : অসামান্য শিল্পীজীবনের গল্প / Abbasuddin Ahmed Unknown Life Story ১৯২৯ সাল। ব্রিটিশ ভারতের রংপুর জেলা। সেই জেলার অন্তর্গত চিকনমাটি গ্রামে এক বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। গ্রামের ফজিলুদ্দীন সরকারের বড় মেয়ে বেগম লুৎফুন্নেসার সঙ্গে বিয়ে হলো কোচবিহার জেলার এক বিখ্যাত লোকসংগীত শিল্পীর সঙ্গে। বিয়ের রাতে ঘটল এক অদ্ভুত ঘটনা। সে রাতে বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন শিল্পীর কলকাতার বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব। ছিলেন বন্ধু তকরিম আহমেদ, যিনি খুব ভালো সেতার বাজাতে পারতেন।  সেদিন বিয়ের পর অতিথি আর পাড়া-প্রতিবেশীদের অনুরোধে সেই বিখ্যাত লোকসংগীত শিল্পীর গানের অনুষ্ঠান শুরু হল। অনুষ্ঠানে যেই না তকরিম আহমেদ তার সেতারে টুংটাং আওয়াজ তুলেছেন, তৎক্ষণাৎ আশেপাশের রক্ষণশীল মুসলিমরা তুমুল আপত্তি জানালো। মুসলমানের বিয়েবাড়ি -- এখানে গান-বাজনা, যন্ত্রসংগীত এসব কেন! এসবের তো কোন সামাজিক প্রচলন নেই! আচমকা সেই বাধায় কলকাতার বন্ধু-বান্ধবরা বেশ মন:ক্ষুন্ন হলেন, আর বন্ধুদের অপমানে লোকসংগীত শিল্পী ভীষণ ক্ষিপ্ত হলেন। গানের অনুষ্ঠানে গন্ডগোলের সময়, তিনি সবার অলক্ষ্যে, কাউকে কিছু না বলে শ্বশুরবা...

সাধক কমলাকান্ত ভট্টাচার্য : জীবনী বা জীবন কাহিনী / Sadhak Kamalakanta Bhattacharya Life Story or Biography

Image
This is about Sadhak Kamalakanta Bhattacharya Life Story ( সাধক কমলাকান্ত ভট্টাচার্য : জীবন কাহিনী ) or his biography (সাধক কমলাকান্ত ভট্টাচার্য : জীবনী) মহামায়া দেবী এবং মহেশ্বর ভট্টাচার্য --- মা ও বাবা ----- দুজনেই উপলব্ধি করেছিলেন, তাঁদের ছেলে কমলাকান্ত বড় হয়ে মহাপন্ডিত হবে, বংশের মুখ উজ্জ্বল করবে। কেন তাঁদের এমন ধারণা? এই কারণে যে, বাবার কাছে কমলাকান্ত যা পড়তেন, যা শুনতেন -- তা কখনো তিনি ভুলতেন না অর্থাৎ ছোট থেকেই কমলাকান্ত ছিলেন স্মৃতিধর ও শ্রুতিধর। তাছাড়া, তাঁর গানের গলাও ছিল অত্যন্ত সুমিষ্ট। উপরন্তু, বর্ধমানের তৎকালীন অম্বিকা-কালনা অঞ্চলের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি তার অন্তরের টান বা ভালবাসা ছিল প্রগাঢ়। এই সমস্ত লক্ষণ গুলিকে মা-বাবা চিনতেন এবং জানতেন। কিন্তু দুঃখের কথা, বালক কমলাকান্তের সাফল্য দেখে যেতে পারেননি বাবা মহেশ্বর ভট্টাচার্য, কারণ কমলাকান্তের বাল্যবয়সেই তিনি মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর মা মহামায়া দেবী তার দুই ছেলে --- কমলাকান্ত ও শ্যামাকান্ত ---- তাঁদেরকে নিয়ে অম্বিকা-কালনার স্বামী-শ্বশুরের ভিটেমাটি ছেড়ে সম্পূর্ণ সহায়সম্বলহীন অবস্থায় বাপের বাড়িতে গিয...